Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

ক্যাপসিকাম ও ঝাল মরিচের সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি

ক্যাপসিকাম ও ঝাল মরিচের সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি
ড. মো. সদরুল আমিন
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে পুষ্টি ও আর্থিক লাভ, সাংবাৎসরিক চাহিদা ও অনুকূল বাজার, ব্যবহার বৈচিত্র্য এবং জলবায়ু ও মাটির উপযুক্ততায় মরিচ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফসল।  মরিচ মসলা ও সবজি ফসল। কেপসিসিন এর ঝালের জন্য দায়ী। কাঁচামরিচে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকে। মরিচ গাছের বৃদ্ধির জন্য উষ্ণ ও আর্দ্র এবং ফলের বৃদ্ধির জন্য শুষ্ক জলবায়ু প্রয়োজন।  
জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দো-আঁশ মাটি চাষাবাদের জন্য উত্তম। মিষ্টি মরিচ  রবি মওসুমে জন্মানো হয়।    
মরিচের জাত : শতাধিক দেশি জাত। তবে ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি বা সবজি মরিচ জাত অন্তত: ৩০টি  যেমন- ক্যাপসিকাম, চাইনিজ জায়েন্ট, বেলবয় গোল ও লংগ্রিন, মিপিস, হাংগেরিয়ান ইয়োলো ওয়াক্স, ম্যারাথন, পেলিটা, যমুনা অগ্নিকন্যা ফায়ার ক্রেকার, আর কে ৬০৭  ও অনেক। সাথে সাথে রয়েছে বারি মরিচ-২, বারি অর্নামেন্টাল মরিচ-১, বারি অর্নামেন্টাল মরিচ-২ জাত।
চিত্র ১: বারি উদ্ভবিত ক্যাপসিকাম জাত বা লাইন
ব্যবহার : বর্তমানে দেশে উন্নত পদ্ধতিতে  ক্যাপসিকাম মরিচের চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে। ক্যাপসিকাম মরিচ সালাদ ও তরকারি হিসেবে কাঁচা ও সিদ্ধ রান্না খাওয়া হয়। কেপসেইসিন (ঈ১৮ ঐ২৭ ঘ) পাসেনটাল টিসুতে থাকায় মরিচ ঝাল হয়ে থাকে। ক্যাপসিকাম মরিচে কেপসেইসিন খুবই কম থাকে।
চাষ পদ্ধতি
ক্যাপসিকাম ও মরিচের উন্নত চাষ পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে এলাকা মাটি ও জাত নির্বাচন, চারা উৎপাদন, চারা রোপণ ও পরিচর্যা, বালাই দমন, ফসল সংগ্রহ  প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণন।  যেহেতু সরাসরি খাওয়া হয় সেজন্য ক্যাপসিকাম চাষে বালাই দমনে বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার স্বাস্থ্য-পুষ্টির জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এখানে  উন্নত চাষ পদ্ধতির মধ্যে বালাই দমন ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি আলোচনা করা হলো।    
ক্যাপসিকাম  চাষে বালাই দমন ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি  
তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে ক্যাপসিকামের রোগ-পোকা ও অন্যান্য বালাই  দমন পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে :
১. মৃত্তিকা  শোধন ও চারা রোপণ
বীজতলার মাটি সূর্যতাপে শোধন করে নিলে ভালো হয়। বীজ বপনের জন্য প্রতি বীজতলায় (৩/১ বর্গ মি.) প্রায় ১০ গ্রাম বীজ দরকার হয়।
৫-৬ সপ্তাহ বয়সের চারা ৭৫ সেমি. দূরত্বে সারি করে ৬০ সেমি. দূরে দূরে রোপণ করতে হয়।    
চিত্র ২: বীজ শোধন, সারিতে বপন ও সুস্থ চারা উৎপাদন
শোধিত বীজ বীজতলায় ৫ সেমি. দূরে  সারি করে ২-৩ সেমি. গভীরে বপন করতে হয়। পিঁপড়ার থেকে রক্ষার জন্য বীজতলার চার ধারে ডারসবান প্রয়োগ করতে হবে।  রবি মৌসুমে চারা সারি ও গাছের দূরত্ব ২৫ঢ২০ সেমি ও খরিপ- ৪৫ঢ৪৫ সেমি. দূরত্বে রোপণ করতে হবে।  
২. সুষম সার প্রয়োগ ও পুষ্টি ঘাটতি পরিপূরণ
চারা রোপণের ২০, ৪০ এবং ৬০ দিন পর ১ম, ২য় ও ৩য় বারে সার বেডের মাটিতে গাছের গোড়া থেকে ১০-১৫ সেমি. দূরে ছিটিয়ে মিশিয়ে দিতে হবে। কম্পোস্ট/গোবর ১০টন,  ইউরিয়া ২৫০-৩০০ কেজি, টিএসপি ২০০-২৫০ কেজি, এমওপি               ২০০-৩০০ কেজি, জিপসাম ৬০-১০০ কেজি।   
ক্যালসিয়ামের (+ ফসফরাস) অপুষ্টি  লক্ষণ গাঢ় নীল বাঁকা পাতা, ক্যালসিয়ামের (+ বোরন) অপুষ্টি লক্ষণ গাছের পাতা কুঁচকে যায় নৌকার মতো বাঁকা হয়। অপুষ্টি রোগ প্রতিকারে করা প্রয়োজন সলুবর বোরন ও ডলুচুন প্রয়োগ করে।
চিত্র ৩: ক্যালসিয়াম, বোরন ও মেগনেসিয়াম ঘাটতির ব্লোসম অ্যান্ড, ও কেøারোসিস লক্ষণ
৩. ফসল চক্র অনুসরণ
মাটিবাহিত রোগের প্রতিকার। একবার মরিচ করার পর একই জমিতে সোলানেসি পরিবার কোন ফসল  আলু, বেগুন, টমেটো  চাষ করা  যাবে না।
৪. রোগ দমন        
মরিচের  রোগের মধ্যে রয়েছে : উইল্ট, পচন রোগ, ড্যাম্পিং অফ, পাতার দাগ, অ্যানথ্রাকনোজ, ঢলে পড়া ও ভাইরাস রোগ। রোগ দমনের জন্য আইপিএম পদ্ধতিসহ কম্প্যানিয়ন ক্যাব্রিওটপ, মাইক্রা, রোভরাল, ব্যাক্টাফ  ও ব্লিটক্স ২-৪ গ্রাম প্রতি লিটার হারে একাধিক স্প্রে করতে হবে। আইপিএম পদ্ধতিতে রোগ নিয়ন্ত্রণ, সকল রোগ পোকা দমনের ক্ষেত্রে ১. রোগের প্রতিরোধী জাত চাষ করতে হবে; ২. আক্রান্ত চারা তুলে তা ধ্বংস করতে হবে; ৩. পর্যাপ্ত জৈবসার ও পরিমিত নাইট্রোজেন ব্যবহার করা উচিত; ৪. জমি সব সময় ভিজা-ভিজা রাখা চলবে না।    
উইল্ট  রোগ : এ রোগ ২ প্রকার যথা- ব্যাক্টেরিয়েল ও ফাংগাল বা ছত্রাকজনিত। সিউডোমোনাস ব্যাকটেরিয়া এবং ফিউজেরিয়াম  ছত্রাকে  পৃথক এ দুটি  রোগ হয়ে থাকে। ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে সম্পূর্ণ গাছ সবুজ অবস্থায়ই নুয়ে পড়ে। ছত্রাক হলে গাছ এক পাশ থেকে বাদামি হয়ে নুয়ে পড়ে। আক্রান্ত কা-ের ভেতরে বাদামি রঙ ধারণ করে। গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় ভেজা মাটিতে রোগের তীব্রতা বাড়ে।
চিত্র ৪: ব্যাক্টেরিয়েল উইল্ট রোগে সবুজ গাছের উইল্টিং
কা-ের ভিতরে বাদামি দাগ লক্ষণ
রোগটি ব্যাক্টেরিয়েল হলে ব্যাক্টাফ ও ব্লিটক্স ও  ছত্রাক হলে  কম্প্যানিয়ন ক্যাব্রিওটপ পরিমিত মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।    
মরিচ কা--ফল পচা ও অ্যানথ্রাকনোজ রোগ :  প্রথমে কা-ে ও মরিচে কাল কাল দাগ দেখা যায়। পরে এই দাগগুলো বড় হয়ে পচে যায়। এখানে বলা দরকার যে মাঠে অধিকাংশ সময় একাধিক রোগ পোকা আক্রমণ করে বলে সমন্বিতভাবে বিবেচনা করে বালাইনাশক নির্বাচন করতে হয় যাতে ন্যূনতম সংখ্যক দ্রব্য স্প্রে করে সুফল পাওয়া যায়।
রোগ নিয়ন্ত্রণে অটোষ্টিন দিয়ে বীজ শোধন করতে হবে; আক্রান্ত হলে কম্প্যানিয়ন/নাভারা ২মিলি/গ্রাম/লি পানি ২-৩ টি ¯েপ্র করতে হবে।     
চিত্র ৫: ফল পচা অ্যানথ্রাকনোজ লক্ষণ
পোকা মাকড় দমন    
ক্যাপসিকাম মরিচের পোকামাকড়ের মধ্যে রয়েছে-মাইটস বা মাকড়, জাবপোকা, সাদা মাছি, ফল মাজরা, কাটুই পোকা, থ্রিপস এসব পোকামাকড় দমনের জন্য জমিতে প্রতি সপ্তাহে জরিপ করে পোকার উপস্থিতি যাচাই করতে হবে;            পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে; একই জমিতে প্রতি বছর মরিচের চাষ করা যাবে না; বালাই প্রতিরোধী জাত চাষ করতে হবে; আক্রান্ত ডগা ও  ফল পোকাসহ ছিঁড়ে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে; পর্যাপ্ত জৈবসার ও পরিমিত নাইট্রোজেন ব্যবহার করতে হবে; পোকা মাকড় হাত বাছাই করতে হবে; আলো ও ফেরোমন ট্র্যাপ ও রঙিন আঠালো স্টিকার কাগজ ব্যবহার করতে হবে; বীজ শোধন ও সুস্থ বীজ ব্যবহার করতে হবে। আইপিএম পদ্ধতি অবলম্বনসহ বালাইনাশক যেমন-সানেক্টিন, সাকসেস, ডারসবান, ইমটাফ, প্রয়োগ করতে হয়। ডারসবান ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।
উপকারী পোকা, পাখি ও পোকা খেকো অন্যান্য প্রাণী সংরক্ষণ করে সঠিক পদ্ধতিতে অনুমোদিত কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
চিত্র ৬: উপকারী পোকা খেকো বিটল
ফসল সংগ্রহ : কাঁচা বা পাকার সঠিক সময়ে মরিচ তুলতে হবে। ফলন- জাত ও মৌসুমভেদে ২০-৪০ টন/হে.।

লেখক : প্রফেসর, হাজী মোঃ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়, দিনাজপুর। মোবাইল : ০১৯৮৮৮০২২৫৩, ই-মেইল :sadrulamin47@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon